পূর্ব প্রকাশের পর:
জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার প্রয়াস.......
আর মনে থাকবে সেই মুখোশধারী মানুষরূপী সেই জানোয়ারটির কথাও, যে আমার অসহায়ত্বের কথা জেনেও আমার সর্বশ্ব নিয়ে আমাকে পথে রেখে গেছে.....
সারারাত পুরানা পল্টন রাস্তার পাশেই বসে ছিলাম। পূর্ব আকাশ থেকে মৃদু আলো নিয়ে উকি দিল সূর্যবাবু। আলোর রেশ ছড়িয়ে পরল সারা আকাশ সহ পুৃরো ঢাকার শহরে। হাটতে হাটতে চলে গেলাম গুলিস্থান, পথটিকে চেনা চেনা লাগছিল। মনে পড়ল গতকাল রাতে এই পথ দিয়েই আমি হেটে এসেছি মিল্কভিটা যাওয়ার জন্য। পকেটে সেই গতরাতের লোকটির দেয়া পাঁচটি টাকাই এখন সম্বল। দেখলাম গুলিস্থান থেকে লেগুনায় ডাকতেছে সদরঘাট পাঁচটাকা। আমি আর লেগুনায় উঠলাম না, পা চালালাম সদরঘাটের দিকে। কারণ আমি তো আর কোথাও কিছু চিনিনা, সদরঘাট অন্তত ফুটওভার ব্রীজের উপরে ঘুমানো যাবে। তাই সেই পথেই চললাম। অনেকক্ষণ হাটার পরে পৌছলাম সেই পরিচিত যায়গায়। উঠেগেলাম সেই ব্রীজে, উপর থেকে দেখছি যানবাহন আর বিচিত্র সব মানুষের বিচিত্র পেশা। কি করব কিছুই ভেবে উঠতে পারছিলাম না। সিদ্ধান্ত নিলাম বসে থাকলে চলবে না, কাজের সন্ধান করতে হবে। কিন্তু কি কাজ করব, কোন কাজই যে করতে পারি না। আর আশেপাশে কোন কল-কারখানাও নেই যেখানে কাজের সন্ধান করব। তারপরেও রিস্ক নিয়ে নেমে গেলাম, বিভিন্ন দোকান, রেষ্টুরেন্টে কাজের সন্ধান করতে লাগলাম। এভাবে সেই সকলা থেকে দুপুর হয়ে গেল কিন্তু কোথাও কাজের জোগার হল না। পেটটার ভেতরে মনে ইদুর দৌড়ানো শুরু করেছে। আর টিকতে পারছিলাম না।
পকেটে থাকা শেষ সম্বল সেই পাঁচটাকা দিয়ে একটি সিংগারা কিনলাম। খেতে খেতে সেটাকে অমৃত্য মনে হচ্ছিল, ওটাকে শেষ করে হোটেল থেকে পেটভরে পানি খেয়ে নিলাম। আবার নামলাম কাজের সন্ধানে, এক লোক আমাকে বল্ল তুমি এক কাজ কর ওয়াইজ ঘাটে যাও, সেখানে কলা, আনারশ, নারকেল আরও অনেক কিছু নৌকা থেকে ওঠানোর জন্য লোক লাগে। কাজটি যদিও তোমার জন্য কষ্ট হবে, তবে করতে পারলে পরে ঠিক হয়ে যাবে এবং অনেক টাকাও পাবে। তার নিকট থেকে ওয়াইজঘাট যাওয়ার রাস্তা জেনে হাটা শুরু করলাম। দেখলাম কাছেই, কিন্তু ঠিক কোথায় কাজ পাওয়া যাবে সেটা বুঝতে পারছিলাম না। আস্তে আস্তে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে শুরু করল। দেখলাম ওয়াইজঘাটে পুরাতন কাপড়-চোপড় সহ বাহারি মালামালে পশরা সাজাচ্ছে কতক লোক। দেখতে দেখতে আরও অনেক লোকই ফুটপাতে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দোকান নিয়ে বসেছে। হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি আসল।
পড়নের পাঞ্জাবিটা খুলে ফুটপাতের এক দোকানির কাছে নিয়ে গেলাম, পাঞ্জাবিটা আমার অনেক শখের ছিল এবং তখন ওটাকে ৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। দোকানি পাঞ্জাবিটা দেখে ৩০ টাকা দাম বল্ল। অবশেষে দফা রফা করে ৫০ টাকায় সেটা বিক্রী করলাম। এর পরে ২০ টাকা দিয়ে একটি পুরাতন লুঙ্গি কিনে প্যান্টটাকেও ৫০ টাকায় বিক্রী করলাম। সেখান থেকে আবার ২০ টাকা দিয়ে হলুদ রংয়ের একটা গেঞ্জি কিনে গায়ে দিলাম। পরনের সু জোরাও বিক্রী করে একজোরা পুরাতন পঞ্চ কিনলাম। এবং আরও একটি লুঙ্গি কিনলাম। পকেটে কয়েকটি টাকা জমা হল, মনেও একটু সাহশ আসল, যাক আরও কয়েকদিন চলতে পারব। চলে গেলাম বুড়িগঙ্গায়, ইচ্ছে মত গোছল করলাম। শরীরটা একটু চাঙ্গা মনে হচ্ছিল। গোছল শেষ হতে না হতেই সন্ধ্যা হয়ে গেল। ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম কলার আরৎ, নারকেলের আরৎ সহ সকল আরৎ। ঘুরে ঘুরে কাজ খুজছিলাম কিন্তু কাজ পাওয়া কি এত সোজা!
এভাবে হয়ত রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানে ঘোরাঘুরি করেছি। হঠাৎ দূড় থেকে শুনতে পেলাম কেউ একজন আমাকে ডাকছে, তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে বয়স আর কতই হবে, বড়জোর আঠেরো/কুড়ি, এই ছেলে এদিকে আয়, ওই বেটা এদিকে আয়, আমাকে উদ্দেশ্য করে ডাকছে। কাছে গেলাম, জিগ্যেস করল খাবি কিছু? ছেলেটি একটি হোটেলে দাড়িয়ে আছে, হোটেলটির নাম আজ আমার মনে নেই। ওরা রাতে হোটেল বন্ধ করার আগে অবশিষ্ট সকল খাবার এভাবেই নাকি মানুষকে দিয়ে দেয়। মাথা নেরে সম্মতি প্রকাশ করলাম, ছেলেটি একটি পলিব্যাগে করে অনেকগুলো পুরি, ছামুছা, সিঙ্গারা সহ আরও অনেক কিছু দিল। এত খাবার দেখে চোখে পানি এসে গেল। ছেলেটিকে বললাম ভাই আমাকে একটা কাজ দিতে পার, সে আর বেশী কথা বলল না, জিগ্যেস করল আমি থাকি কোথায়? তাকে সব বললাম। সে বলল আচ্ছা আমি দেখি আমার পরিচিত যারা আছে তাদের সাথে কথা বলে তোকে জানাব, তুই কাল একবার আসিস। বলেই হোটেলের ভেতরে চলে গেল।
রাতে খুব পেটপুরে খেলাম, চলে গেলাম সদরঘাটে। সেখানে টার্মিনালের একপাশে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুম ভাংগল মানুষের হট্রগোলে, অর্থাৎ সকাল হয়ে গেছে। বিভিন্ন যায়গা থেকে বিভিন্ন লঞ্চ এসে থামছে আর তার যাত্রীরা তরিঘরি করে নামছে। তারাতারী সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম, আবার পরিচিত কেউ যদি দেখে ফেলে! আবার চলে গেলাম সেই হোটেলের ছেলেটার কাছে। সে বল্ল একজনের সাথে কথা হয়েছে, দুপুরে সে জানাবে। তুই এখন যা, আমার হাতে অনেক কাজ। দুপুরে একবার আসিস। কোথায় আর যাব, নেমে পরলাম বুড়িগঙ্গায়, গোসলের কাজটা সেরে ফেললাম। মনটা আস্তে আস্তে হালকা হতে লাগল। দুপুর পর্যন্ত সেখানেই ঘোরাঘুরি করলাম। সেই দুই দিন আগে বাসা থেকে ভাত খেয়ে এসিছি অর্থাৎ আজ তিনদিন হল ভাত খেতে পাইনি। ভাতের জন্য মনের ভেতরে হাহাকার করে উঠল। কিন্তু ভাত খেতে গেলে তো আমার পকেটের সব টাকাই শেষ হয়ে যাবে। কি করব ভাবছিলাম, এরই মধ্যে এক লোক এসে জিগ্যেস করল, “তুই থাকস কইরে, তোকে কাল থেকে দেখতেছি এহানে ঘুরঘুর করতাছ, মতলবটা কি?” কথাগুলো একটু ধমকের শুরেই বলল। মাথার রক্ত গরম হয়ে গেল, আমি কারো ধমক সহ্য করার মত না। তারপরেও নিজেকে শান্ত করলাম, ঘোরাঘুরির কারণটাও তাকে বললাম। সেও ধমক ছেড়ে এবার নম্রভাবে জিগ্যেস করল বাড়ি কোথায়? বললাম, জিগ্যেস করল বাড়িতে কে কে আছে, বললাম কেউ নেই। বাড়িতে থাকার কোন যায়গা নেই তাই ঢাকা এসেছি কাজের খোজে, এটাও বললাম যে, আমি তিনদিন ধরে ভাত খাইনা। লোকটি আর কোন কথা ন বলে আমাকে বলল আমার সাথে আয়।
চলবে......
Halo Dear Friends,
We can do anything for ourselves if we want. We do not have to pay any attention to this. So I have made the following decisions. The ones who complete the following steps will also give him the same reprisal.
Follow 👉 @sohelsarowar
👉 Resteem any post from my Blog
👉 Upvote any post from my Blog
I request be honest and kind, once you completed all steps then dont forget to leave your post URL in the comment box i will do sometime instant otherwise confirm in 4-24 hours. respect everyone. Thank You!
Note: Please do not post multiple Post URL in the same blog. 1 person Allow 1 URL then after 24 hours i will new post then you can give me the new one.
Thank you...
অনেক ভালো লিখেছেন ভাই আপনি।
সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেক অনকে ধন্যবাদ ভাই।
Congratulations!
Steemit Bangladesh Discord Server.This post has been upvoted from Steemit Bangladesh, @steemitbd. It's the first steemit community project run by Bangladeshi steemians to empower youths from Bangladesh through STEEM blockchain. If you are from Bangladesh and looking for community support, Join
If you would like to delegate to the Steemit Bangladesh, you can do so by clicking on the following links:
50 SP, 100 SP, 250 SP, 500 SP, 1000 SP.
YOU ARE INVITED TO JOIN THE SERVER!
Congratulations @sohelsarowar! You have completed the following achievement on the Steem blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
<p dir="auto"><a href="http://steemitboard.com/@sohelsarowar" target="_blank" rel="noreferrer noopener" title="This link will take you away from hive.blog" class="external_link"><img src="https://images.hive.blog/768x0/https://steemitimages.com/70x80/http://steemitboard.com/notifications/votes.png" srcset="https://images.hive.blog/768x0/https://steemitimages.com/70x80/http://steemitboard.com/notifications/votes.png 1x, https://images.hive.blog/1536x0/https://steemitimages.com/70x80/http://steemitboard.com/notifications/votes.png 2x" /> Award for the number of upvotes <p dir="auto"><sub><em>Click on the badge to view your Board of Honor.<br /> <sub><em>If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word <code>STOP <blockquote> <p dir="auto">You can upvote this notification to help all Steemit users. Learn why <a href="https://steemit.com/steemitboard/@steemitboard/http-i-cubeupload-com-7ciqeo-png" target="_blank" rel="noreferrer noopener" title="This link will take you away from hive.blog" class="external_link">here!Peace, Abundance, and Liberty Network (PALnet) Discord Channel. It's a completely public and open space to all members of the Steemit community who voluntarily choose to be there.Congratulations! This post has been upvoted from the communal account, @minnowsupport, by sohelsarowar from the Minnow Support Project. It's a witness project run by aggroed, ausbitbank, teamsteem, someguy123, neoxian, followbtcnews, and netuoso. The goal is to help Steemit grow by supporting Minnows. Please find us at the
If you would like to delegate to the Minnow Support Project you can do so by clicking on the following links: 50SP, 100SP, 250SP, 500SP, 1000SP, 5000SP.
Be sure to leave at least 50SP undelegated on your account.
This post has received a 3.13 % upvote from @drotto thanks to: @sohelsarowar.
How Cool!
You got a 7.69% upvote from @coolbot courtesy of @sohelsarowar!
Help us grow, delegate today!