সারাদিন বৃষ্টি শেষে বিকেলে বৃষ্টি থেমেছে। বিকেলে যে একটু বাইরে গিয়ে বেড়াবো তারও কোনো উপায় নেই। সারাদিন বৃষ্টিতে রাস্তায় কাঁদা হয়ে গেছে। এরকম কাঁদামাখা রাস্তায় হাঁটা খুব কষ্টকর। এদিকে সারাদিন ঘরবন্দী থাকতে থাকতে মনটা একেবারে বিষণ্ন হয়ে উঠেছে। ইচ্ছে করছে গ্রামটা ঘুরে দেখতে কিন্তু এরকম কাঁদামাখা রাস্তায় তো আর হাঁটাচলা করা যায় না। কি করা যায় ভাবতে লাগলাম। হঠাৎ এক প্রতিবেশী বড় ভাই কল দিল। প্রতিবেশী হলেও আমাকে নিজের ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করে। সে যাই হোক আমি কল রিসিভ করলাম। সে বলল, "ঘুরতে যাবি নাকি?" আমি মন খারাপ করে বললাম, "না, ভাই। যাওয়া হবে না।" বড় ভাই বলল, "কেন?" আমি বললাম এরকম কাঁদামাখা রাস্তায় ঘুরব কিভাবে। কাঁদামাখা রাস্তায় ঠিকমত হাঁটা যায় না তো।" তখন বড় ভাই বলল, "তোকে কি আমি হাঁটতে বলছি নাকি?" আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, "তাহলে?" তখন বড় ভাই বলল, নৌকায় ঘুরব রে পাগলা। তুই যাবি নাকি?" আমি তো শুনে মহাখুশী। নৌকায় বেড়ানোর মতো হিতকর মূহুর্ত আর কি হতে পারে! আমি বললাম, "যাবনা মানে? অবশ্যই যাব। তুমি নৌকা নিয়ে আসো। আমি নদী তীরে আসতাছি।" এই বলে কল কেটে দিয়ে এক লাফে বিছানার ওপর থেকে উঠে পড়লাম। আমার আনন্দ আর দেখে কে! চলে গেলাম নদীর তীরে।
সেখান গিয়ে দেখি বড় ভাই নৌকা ভিড়িয়ে বসে আছে। আমি নৌকায় উঠে বসলাম। বড় ভাই মাঝি হয়ে নদীতে বৈঠা ফেলে ফেলে নৌকা এগিয়ে নিয়ে চলল। আমি নৌকাতে বসে বসে চারদিকের দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম। নদীতে ছিল মৃদু মৃদু বাতাস। এই বাতাস দেহ ও মন জুড়িয়ে দিল। নদী কানায় কানায় পানিতে পূর্ণ। নদীর ছোট ছোট ঢেউগুলো খুব সুন্দর দেখতে লাগছিল। নদীতে একঝাঁক সাদা হাঁস প্যাঁক প্যাঁক করতে করতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সাদা হাঁসগুলো দেখতো খুব সুন্দর ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে যেন একঝাঁক পানকৌড়ি পাখি উড়ে এসে নদীতে নেমে পড়ল। পাখিগুলোর গোসল দেওয়ার দৃশ্য ছিল অসাধারণ। নদীর দুই তীরে যেন সবুজের মেলা বসেছে।
.jpeg)
সবুজের মেলার মাঝে হঠাৎ করে চোখে পড়ল একগুচ্ছ সাদা কাশফুলের হাসি। হালকা হাওয়ার দোলা কাশফুলের হাসির মাঝে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। হালকা হাওয়াতে সবুজের ঢেউয়ের সাথে সাথে সাদা কাশফুলগুলোও দুলছে। এই সাদা কাশফুলের ঢেউ খেলানো হাসি আমার সবচেয়ে বেশি মন কেড়েছে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসতে লাগল। সূর্য পশ্চিম আকাশে লাল বর্ণ ধারণ করেছে। পানিতে লাল সূর্যের প্রতিফলন ছিল অসাধারণ। এরকম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে বাড়ির পথে রওনা হলাম। সম্পূর্ণ অন্ধকার নেমে আসার পূর্বেই বাড়ি ফিরে আসলাম।

এইরকম কিছু একটা উপভোগ করার অনেক ইচ্ছা। শেষ নৌকায় উঠেছিলাম তাও মেবি ১ বছর এর উপর হতে চলছে। যাইহোক আপনার লিখা শুনে মনে হচ্ছে অনেক ভালো একটা সময় কাটেছে। বেস্ট অফ লাক।
মূহুর্তগুলো সত্যি অসাধারণ ছিল। এরকম এই মূহুর্ত উপভোগের পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল সেই বড় ভাইয়ের। তিনি সেদিন না ডাকলে হয়তো এরকম দৃশ্য সরাসরি দেখার সুযোগ পেতাম না